অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সুইডেনে প্রথম যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পুড়িয়েছিলেন, তার বসবাসের নথিপত্র যাচাই করে দেখছে দেশটির অভিবাসন সংস্থা। শুক্রবার সুইডিশ অভিবাসন সংস্থার এক মুখপাত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি কোরআন পোড়ানোর একাধিক ঘটনায় মুসলিম দেশগুলোর ব্যাপক সমালোচনার জেরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে খানিকটা চাপে রয়েছে সুইডেন। গত ২৭ জুন দেশটিতে প্রথম কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল। ওই দিন রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে কোরআন পুড়িয়েছিলেন সালওয়ান মোমিকা (৩৭) নামের এক মুসলিম ব্যক্তি, যিনি কয়েক বছর আগে ইরাক থেকে শরণার্থী হিসেবে সুইডেনে গিয়ে সেখানে বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন।
এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদে জুলাই মাসের শুরু থেকে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো যখন সোচ্চার, তার কিছু দিনের মধ্যে ফের স্টকহোমে ইরাকের দূতাবাসের সামনে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানো হয়। কাছাকাছি সময়ে ডেনমার্কেও একই ঘটনা ঘটে।
গত ১২ জুলাই এ ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউএনএইচআরসিতে। তারপর গত ২৭ জুলাই এ ইস্যুতে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘের প্রধান ও বৃহত্তম ফোরাম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও।
সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিটি জানিয়েছে, ইরাক থেকে শরণার্থী হিসেবে যাওয়া সালওয়ান মোমিকা সুইডেনে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন। ২০২৪ সালে সেই অনুমতির মেয়াদ শেষ হবে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, গত ২৭ জুন স্টকহোমে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে নিজ হাতে কোরআন পোড়ানোর পর ইরাকের দূতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানোর সমাবেশেও উপস্থিত ছিলেন সালওয়ান। তবে সমাবেশে উপস্থিত থাকলেও সেবার তিনি পোড়ানোতে অংশ নেননি।
কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে চলতি জুলাই মাসেই সুইডেনের ইসরায়েল দূতাবাসের সামনে ইহুদিদের পবিত্র গ্রন্থ তোরাহ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পুড়িয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি।
সুইডেনের বিভিন্ন আদালত জানিয়েছেন— দেশটির রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ও আদর্শ অনুযায়ী ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো সংক্রান্ত সমাবেশে পুলিশ বাধা দেওয়ার নৈতিক এক্তিয়ার রাখে না। তবে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন জানিয়েছেন, ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো রোধে দেশের পাবলিক অর্ডার আইনে পরিবর্তন চান তিনি।
সুইডেনের সরকার যদি চায়, সেক্ষেত্রে সালওয়ান মোমিকার সুইডেনে বসবাসের অনুমোদন বাতিল হতে পারে। সেই সংক্রান্ত কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কিনা— জানতে চাইলে অভিবাসন সংস্থা সেই মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘এটা একটা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ার শেষে কী সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ নেবে— তা এখনও জানানোর সময় আসেনি।’
Leave a Reply